ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজে কেন পড়বে? ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বা উন্নয়ন অধ্যায়ন সাবজেক্ট রিভিউ

ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজে কেন পড়বে? 

সাবজেক্ট রিভিউ : ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বা উন্নয়ন অধ্যায়ন 



ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজে কেন পড়বে?  সাবজেক্ট রিভিউ : ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বা উন্নয়ন অধ্যায়ন


Development studies  বিভাগে কেন পড়বেন? ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ পড়ে কি হতে পারবেন। ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ সাবজেক্ট রিভিউ।




আসসালামু আলাইকুম।

প্রিয় বন্ধুরা কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আল্লাহর রহমতে আমিও ভালো আছি। বন্ধুরা আজ আমরা নতুন একটি সাবজেক্ট সম্পর্কে রিভিউ করতে এসেছি। আপনি বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছেন। এখন কি সাবজেক্ট নিয়ে পড়বেন তা নিয়ে খুব চিন্তিত। একেকজন একেক রকম পরামর্শ দিচ্ছে। আপনার জন্যই আজকের লেখাটি।


আশা করি তারা উপকৃত হবেন যারা সাবজেক্ট চয়েস নিয়ে দোদুল্যমান অবস্থায় আছেন। তাদের সাবজেক্ট তালিকায় যদি ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ সাবজেক্টটি থাকে তারা এই সাবজেক্টটি নিতে পারেন। বা রিভিউ টি পড়ে ধারণা নিতে পারেন। তাহলে চলুন আমরা মূল আলোচনায় আসি। সবার আগে আমাদের জানতে হবে এই বিভাগে কি পিড়ানো হয়। কারণ অনেকে হয়ত এটাই জানেনা এই বিভাগের উদ্দেশ্যই বা কি।তাহলে আগেই এর উদ্দেশ্য কি বা এখানে কি পড়ানো হয় তা জেনে নেই।


ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজে পড়ার উদ্দেশ্য কি।

যদি নিজের মত করে একেবারেই সহজ ভাষায় বলি তবে বলতে হয়, ঢাবির এই বিভাগের উদ্দেশ্য হচ্ছে আন্তর্জাতিক,  রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক উন্নয়ন কীভাবে করা যায় তা জানা।
এবার একটু বিস্তারিত বলি। একটা সময় মানুষের ধারনা ছিল টাকা পয়সা থাকলেই কোনো ব্যক্তি, রাষ্ট্র বা প্রতিষ্ঠান উন্নত এবং তারাই সেরা। কিন্তু ৯০এর দশকে এসে এই ধারনা সম্পূর্ণ পাল্টে যায়। মানুষ বুঝতে শেখে টাকা পয়সা থাকলেই উন্নত বলা চলে না। বরং একটি দেশকে তখনই উন্নত বলা যায়, যখন সামাজিক, রাষ্ট্রীয়, সাংস্কৃতিক, অবকাঠামো, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ইত্যাদি সামগ্রিকভাবে উন্নত হয়।এই সব উন্নয়ন করার জন্য প্রয়োজন গবেষণার। ফলে বিশেষ কিছু ব্যক্তির প্রয়োজন। তাই এই বিভাগের সূচনা। আর বিশ্বায়নের ফলে উন্নত দেশগুলোর সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ কে এগিয়ে নিতে আমাদের সরকারও আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ চালু করার পরামর্শ দেন। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও দেশের অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়ন অধ্যায়ন পড়ানো হচ্ছে। যেমন চবি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনাল, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়,ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী দানেশ ইত্যাদি।  কিছু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়েও এই সাবজেক্টটি পড়ানো হচ্ছে।


বাংলাদেশে সর্ব প্রথম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০০ সালে উন্নয়ন অধ্যায়ন বিভাগটি শুরু হয়। তবে আন্ডার গ্রাজুয়েট কোর্সটি মূলত ২০০৮-৯ থেকে চালু হয়। এখন ১৩ তম ব্যাচ চলছে। এছাড়া এখানে ১ বছর মেয়াদি মাস্টার্স কোর্স চালু আছে। মাস্টার্স অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ নামে সন্ধ্যালীন কোর্স আছে। ব্যাংকারদের জন্য এমফিল করার সুযোগ আছে।



ইসলামিক স্টাডিজে কেন ভর্তি হবেন বা ইসলামিক স্টাডিজের ফিউচার কি? তা জাআনতে এই লেখাটি পড়তে পারেন।



বাংলাদেশে এই সাবজেক্ট টি তুলনামূলকভাবে নতুন হলেও ইউরোপ, আমেরিকা, ফ্রান্স ইত্যাদি উন্নত দেশগুলোতে অনেক আগেই উন্নয়ন অধ্যায়ন পড়ানো হচ্ছে। এছাড়া বিদেশে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আছে যেখানে উন্নয়ন অধ্যায়ন এর উপর অনার্সের পাশাপাশি, মাস্টার্স, এমফিল, পিএইচডি ইত্যাদি ডিগ্রি করারও সুযোগ রয়েছে।


এবার বলব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে কি কি পড়ানো হয়।


এই বিভাগে মোটামুটি সব বিষয়ে পড়ানো হয়। সাইন্স, আর্টস ও কমার্সের অনেক ব্যপার Development studies এর সাথে জড়িত। তাই একে মাল্টিডিসিপ্লিনারি সাবজেক্টও বলা যেতে পারে। সমাজনীতি, রাজনীতি, অর্থনীতি, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, পরিবেশ বিজ্ঞান,  সাংস্কৃতিক উন্নয়ন, মানব সম্পদ উন্নয়ন,  জন উন্নয়ন ও গবেষণা ইত্যাদি সবরকম উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে দিক নির্দেশনা থাকে। যা সচরাচর অন্যান্য সাবজেক্ট বা বিভাগে নেই। কাছাড়া অন্যান্য বিভাগের মত মাইনরিটি বিষয়গুলো এখানেও পড়ানো হয়। মোটামুটি সব বিষয়ে আলোচনা থাকার কারনে চাকরির ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ এর ছাত্র ছাত্রীরা ভালোই করছে। তাছাড়া পড়াশোনা তো সম্পূর্ণ নিজের ব্যপার। ডিপার্টমেন্ট শুধু পথ দেখাবে। এখানে মূলত পাঠ্যপুস্তক এর পড়াশোনার পাশাপাশি কিভাবে বাস্তব জীবন উন্নয়ন করার জন্য তা প্রয়োগ করতে হবে তা শেখানো হয়।ফলে উন্নয়ন অধ্যায়নের শিক্ষার্থীরা বাস্তব ও কর্মমূখী শিক্ষাটা পাচ্ছে বলা যায়।


এবার আসি আসল কথায়। কারন সাবাই এটাই জানতে চায়। কি পড়লাম তা জানা তেমন প্রয়োজন মনে করেনা বরং কি পেলাম বা কি চাকরি করি,কত টাকার বেতনে চাকরি করি সেটাই অধিকাংশ মানুষের জানার ইচ্ছে থাকে। ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ পড়ে আপনার ক্যারিয়ার কি? বা কি জব পাবেন।




আপনি কেন ফার্মেসি বিভাগে পড়বেন বা ফার্মেসি সাবজেক্ট পড়ে আপনি কি করবেন? তা জানতে এই লেখাটি পড়ুন


জব মার্কেটে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ।


যেহেতু বিশ্ব এখন উন্নয়নের জোয়ারে ভসছে সুতরাং এর জভ ফিল্ডের কথা না বললেই চলে। তার পরেও কিছু তো বলতে হয়। যদিও এটি একটি এনজিও ভিত্তিক সাবজেক্ট কিন্তু এখন তা সরকারি ক্ষেত্রেও ছড়িয়ে পড়েছে। সরকারের অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে উন্নয়ন কাজে জড়িত এগুলো এই বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রাধান্য পাবে।
এছাড়া শিক্ষক হওয়ার সুযোগ রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে এর চাহিদা বেশি যেমন, Action Aid, UNDP, JAIKA UNICEF, IMF, PKSF, WORLD VISION, NGO ইত্যাদি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান গুলো আগে থেকেই উন্নয়ন অধ্যায়ন এর শিক্ষার্থীদের বায়োডাটা চেয়ে থাকে। এছাড়া দেশের সরকারি বেসরকারি  বিভিন্ন ব্যাংকে এর দুযোগ রয়েছে।


আর কোনো উপায় না পেলে বিসিএস তো আছেই। তবে সব কিছুর জন্য একটাই শর্ত,  পড়াশোনা করতে হবে। পড়াশোনা ছাড়া সবই শূন্য। ডিপার্টমেন্ট আপনাকে কিছুই দিতে পারবেনা।

উন্নয়ন অধ্যায়ন বিভাগে আসন সংখ্যা মাত্র ৩০ টি। শিক্ষক আছেন ২৭ জন। এখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান স্যারও যুক্ত আছেন। দরিদ্র ও মেধাবীদের জন্য রয়েছে মোটা অংকের স্কলারশিপ।
পিকনিক নবীন বরণ আনন্দ উদযাপন এগুলো তো সব বিভাগেই থাকে। সুতরাং এগুলোর কথা বলার প্রয়োজন নেই। সব শেষে ধন্যবাদ জানিয়ে বিদায় নিচ্ছি।

আল্লাহ হাফেয।
আবার কথা হবে অন্য আরেকটি বিষয় নিয়ে। আশা করি আমার লেখা সাবজেক্ট রিভিউ  ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বা উন্নয়ন অধ্যায়ন এর উপর ভালো মন্দ  মন্তব্য করতে ভুলবেন না।

কোন মন্তব্য নেই

Barcin থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.