ফার্মেসি বিভাগে কেন পড়বেন? সাবজেক্ট রিভিউ - ফার্মেসি

সাবজেক্ট রিভিউ ফার্মেসি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।


আপনি কেন ফার্মেসি বিভাগে পড়বেন বা ফার্মেসি সাবজেক্ট পড়ে আপনি কি করবেন?


আপনি কেন ফার্মেসি বিভাগে পড়বেন বা ফার্মেসি সাবজেক্ট পড়ে আপনি কি করবেন?



ফার্মেসি হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র বিভাগ, যেখানে যখন আপনার বন্ধুরা ৪ বছরে সম্মান কোর্স শেষ করে Rag day পালন করবে আর আপনি ৫ম বর্ষে উঠবেন। হ্যাঁ , তাহলে আন্দাজ করতে পেরেছেন।  ফার্মেসি বিভাগ হচ্ছে ৫ বছরের অনার্স কোর্স । যেখানে মাস্টার্স সহকারে প্রায় ৭ বছর+ লেগে যায় । কিন্তু কি আর করার! ভালোবাসারও তো ব্যপার আছে,  ডিপার্টমেন্ট আর বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের যে ছাড়তেই  চায় না,সেই ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে আমরাও ক্লাস রুম ছেড়ে পালাইনা



সবার চাহিদার কথা লক্ষ্য করে আগে চাকুরির বাজারের কথায় আসি। ভর্তি হওয়ার পূর্বে অনেকে বলতেন যদি কোনো রকমে এই সাবজেক্ট পড়ে তৃতীয় বর্ষে ওঠা যায় তবে চাকরি নিশ্চিত। খালি পাশ করবা দেখবে  জয়েন করলেই লাখ দুই এক টাকার বেতন পাওয়া নিশ্চিত। পরে তো প্রোমোশন হবেই, তখন তো টাকার ছড়াছড়ি! আবার এমন কিছু লোকের সাথেও কথা হয়েছে যারা বলেছেন, ঔষধের দোকানদার হয়ে আবার কিসের পড়া শুনা, এদের কি পড়া শুনা লাগে? কয়দিন দোকানে বসে ঔষধ বিক্রি করলেই তো সব জানা যায়।


এই দুই ধরণের লোকদের কাউকে এখন দেখতে পাইনা। সত্য বলতে কি!! বর্তমানে দেশে ছোটবড় সব মিলে প্রায় ২৫০+ ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি আছে, যে কোম্পানিগুলোতে সাধারণত অনেক ফার্মাসিস্ট নিয়োগ দেয়া হয়। আর একটা ব্যপার হচ্ছে, আগে ফার্মেসি সাবজেক্ট শুধু পাবলিক ভার্সিটিগুলোতে ছিল কিন্তু এখন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও যুক্ত হয়েছে। যার কারণে প্রতিটা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রচুর ফার্মাসিস্ট বের হচ্ছে।



তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের ব্যপার আলাদা। ঢাবির সুনাম এবং ফার্মাসিস্টদের চাহিদা আমাদের শ্রদ্ধেয় বড় ভাই আপু এবং টিচারদের জন্য এখনো অক্ষত বা অক্ষুণ্ণ রয়েছে।


আমার নিজের অভিজ্ঞতায় বলতে পারি, মানে আমি গত দুই বছরে যা দেখলাম তা হচ্ছে, আমাদের ফার্মেসি বিভাগ থেকে যারা গ্র্যাজুয়েট হয়েছেন তাদের অনেকেরই ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে জব হয়ে গেছে।


যদি কেউ ফার্মা ইন্ডডাস্ট্রিতে জয়েন না করে শিক্ষকতার পথ বেছে নিতে চায় তবে তাদের জন্যও যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। দেশে সরকারি বেসরকারি অনেক কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসি পড়ানো হয় এবং টিচারের প্রয়োজন রয়েছে।



তবে আরেকটা বিষয় হচ্ছে, ফার্মেসি থেকে মনে হয় স্কলারশিপ পাওয়া সহজ, আমি নিশ্চিত করে বলছিনা, তবে কিছুদিন পর নিজের সময় আসতেছে তখন বুঝা যাবে। নিজের চোখে হরহামেশা যেটা দেখি তা হচ্ছে বড় ভাই আপুরা অনেকেই স্কলারশীপ নিয়ে বাহিরে চলে যাচ্ছেন।



তার সাথে বর্তমান বাজারের বিসিএস চাহিদার প্লাটফর্মেও পিছিয়ে নেই। সপ্তাহে ৫ দিন ক্লাস, তাও আবার ৮.৩০ থেকে। সাথে সপ্তাহে ২-৫ টা ল্যাব করেও বড় ভাই আপুরা দেখিয়ে দিয়েছে,  পররাষ্ট্র, প্রশাসন ও পুলশে আমরাই সেরা। আর যদি জব দিয়ে বিচার করেন তবে বলব এ ফার্মেসি বিভাগ থেকে খুব সহজেই একটি জব পাওয়া যায়।



এখন একটু অন্য আলোচনায় যাই-----

সত্যি করে বলতে গেলে আমাদের কোনো নিজস্ব ভবন নেই, তাই বিভিন্ন বিভাগের রুমেও ক্লাস করতে হয়, সে জন্য অবশ্য সিআরদের বেশি কষ্ট হয়। তারা ঘুরে ঘুরে ক্লাস রুম খুঁজে বের করেন। কখনও কার্জনে,কখনও আবার মোকাররমে,আবার সাইন্স কম্প্লেক্স বিল্ডিংয়ে সব যায়গায় গিয়ে ক্লস করতে হয়। ল্যাবগুলোও বিভিন্ন যায়গায় হয়। তবে সব ক্লাসরুম এসি করা। তিব্র গরমেও কম্বোল গায়ে দিতে পারবেন।



এবার একটু বিনোদন ও ঘুরাঘুরির ইভেন্টে আসি------

ফার্মেসি বিভাগকে বিভিন্ন প্রোগ্রামেরর বিভাগও বলতে পারবেন।কারণ বছরে বনভোজন, নবীন বরণ, ফার্মেসি ডে, ডুপা রিইউনিয়ন, ইত্যাদি প্রোগ্রাম মিলে বছরে প্রায় ৭/৮ টা অফিসিয়াল প্রোগ্রাম আছে। যেগুলো আমরা নিজেরাই খুব আনন্দের সাথে আয়োজন করি। প্রোগ্রাম গুলোতে বিভিন্ন ইভেন্ট থাকে।চাইলে আপনি আপনার সুপ্ত প্রতিভা বিকশিত করতে পারবেন। প্রোগ্রামে  কালচারান সেশন তো থাকেই।মোট কথা পড়া লেখার সাথে সাথে আমরা অনেক মজাও করে থাকি। হল সংগঠন গুলোতেও ভালো একটিভ থাকে।



আমার দৃষ্টিতে  সবচেয়ে আকর্ষণীয় ব্যপার হচ্ছে ৫ম বর্ষের ইন্ডিয়া ট্যুর। এখন ছবি দেখে হা করে তাকিয়ে থাকি আর অপেক্ষারত আছি কখন ৫ম বর্ষ আসবে আর ইন্ডিয়া ট্যুরে যাব। ট্যুর এত মজার হয় ছবিতে দেখে অবাক হই।



পরিশেষে বলব, মানুষ সাধারণত নিজের বিষয়টা নিয়ে হতাশায় থাকে,তবে আমার মনে হয় ফার্মেসি বিভাগ তেমন একটা নেই--------

আমার একান্ত ব্যক্তিগত মতামত
ফার্মেসি বিভাগ
ঢাবি, ৩য় বর্ষ

কোন মন্তব্য নেই

Barcin থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.