শুক্রবার দিনের আমল ও ফজিলত

শুক্রবার দিনের গুরুত্ব পূর্ণ কিছু বিশেষ আমল ও ফজিলত।

শুক্রবার দিনের বিশেষ আমল ও ফজিলত।। শুক্রবার দিনের অনেক আমল ও ফজিলত রয়েছে। জুময়ার দিনের বিশেষ ফজিলত নিয়ে লেখা একটি ব্লগ। শুক্রবারের বয়ান Fakhrul Academy, infobd266,।


শুক্রবার হচ্ছে মুসলিম জাতির জন্য এ
কটি সাপ্তাহিক আমলেরর দিন। এই দিনকে মুসলমানদের মধ্যে যাদের হজ্জ করার টাকা নেই তাদের জন্য হজ্জের দিনও বলা। অর্থাৎ শুক্রবার হচ্ছে গরীবের হজ্জের দিন। এই দিনটির আরবি নাম ইয়াওমিল জুমআ বা জুমআ বার বা শুক্রবার।


এই দিনটির বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট আছে। আমরা জানি আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন আমি এই পৃথিবী মাত্র ছয় দিনে সৃষ্টি করেছি।


তবে আল্লাহ চাইলে মুহূর্তের মধ্যে সৃষ্টি করতে পারতেন কিন্তু বান্দাদের একটি সিস্টেম বা পদ্ধতি শিক্ষা দেয়ার জন্য আল্লাহ তায়ালা ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন।


অর্থাৎ কোনো কাজে তাড়াহুড়ো না করে রুটিন মেনে করা উচিৎ,এই মেসেজটিই হয়ত আল্লাহ জগতবাসীকে দিয়েছেন।

আল্লাহ যে ছয়দিনে জগত সৃষ্টি করেছেন তার প্রথম দিনটি ছিল রবিবার আর যেদিন কাজা শেষ হয়েছে সে দিনটি ছিল শুক্রবার।


এছাড়া এই দিনেই আল্লাহ তায়ালা এই পৃথিবীকে ধ্বংস করে দিবেন বা শুক্রবারে কেয়ামত সংগঠিত হবে।আমাদের আদি পিতা হযরত আদম আ: কে শুক্রবার দিনেই সৃষ্টি করা হয়। শুক্রবারেই জান্নাত দান করা হয় আবার এই দিনেই জান্নাত থেকে দুনিয়ায় পাঠানো হয়। আরও অনেক অনেক ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে শুক্রবার দিনে ঘটেছে এবং ঘটবে।


শুক্রবারের দিনের আমলের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে আল্লাহ তায়ালা সূরা জুমআ নামক একটি সূরাও নাযিল করেছেন, এই সূরার নয় নাম্বার আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বান্দাদেরকে সতর্ক করে বলেন ---


হে ইমানদারগণ!  যখন জুমআর আযান হয় তখন তোমরা আল্লাহর স্বরণে দ্রুত যাও এবং সব ধরনের বেচা কেনা বা অন্যান্য কাজ কর্ম ত্যাগ কর। এটা তোমাদের তোমাদের জন্য সর্বোত্তম যদি তোমরা বুঝ বা জানো।

বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি শুক্রবারে আযানের সাথে সাথে সবার আগে মসজিদে প্রবেশ করবে সে যেন একটি উট কুরবানি দেয়ার সওয়াব পেল।যে ব্যক্তি তার পর যাবে সে যেন একটি গুরু কুরবানি দেয়ার সওয়াব পেল।


আর যে ব্যক্তি তার পর গেল সে যেন একটি দুম্বা কুরবানি দেয়ার সওয়াব পেল,যে ব্যক্তি তার পর মসজিদে গেল সে যেন একটি বকরি বা ছাগল কুরবানি দেয়ার সুযোগ পেল। এভাবে পর্যায়ক্রমে মুরগি এবং ডিম দান করার সওয়াব পাবে। অর্থাৎ এরকম উদাহরণ দিয়ে জুমআর দিনে মসজিদে আগে যাওয়ার প্রতি গুরুত্ব বুঝানো হয়েছে।


কিন্তু দূঃখের বিষয় হলেও সত্য, আমরা শুক্রবার দিন সবচেয়ে দেরি করে মসজিদে যাই। শহরের মসজিদগুলোতে দেখা যায়, যখন মুয়াজ্জিন ইকামত দেন তখন মুসল্লিরা আসেন এবং দুই রাকাত নামাজ আদায় করে চলে যান। এভাবে আমরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ সওয়াব থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।



শুক্রবার দিনে এমন একটি সময় আছে যে সময় দোয়া করলে আল্লাহ কবুল করেন।  এ সময় নিয়ে মতামত আছে। কেউ বলেছেন আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়, আবার কেউ বলেছেন ইমাম সাহেবের দুই খুৎবার মধ্যবর্তী সময়,আবার কেউ বলেছেন আছরের পর থেকে মাগরিবের আযানের আগ পর্যন্ত কোনো একটি সময়ে।


তবে সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য মনে হয় শুক্রবার আছরের পর থেকে মাগরিবের আগ পর্যন্ত। কেননা এই দিন হযরত আয়েশা রাঃ আছরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত বিভিন্ন দোয়া ও ইবাদতে মশগুল থাকতেন।



শুক্রবার দিনের আরেকটি গুরুত্ব পূর্ণ আমল হচ্ছে সূরা কাহাফের তিলাওয়াত, যে ব্যক্তি প্রতি শুক্রবার সূরা কাহাফ তিলাওয়াত করবে আল্লাহ তাযালা তাকে দাজ্জালের ফাৎনাহ থেকে হেফাজত করবেন।  আর যে শুক্রবার তিলাওয়াত করবে সে সময় থেকে পরের শুক্রবার পর্যন্ত তার জন্য আল্লাহর একটি নূর হবে যা তাকে হেফাজত করবে।



বলা হয় যদি শুক্রবার আছরের নামাজের পর কোনো ব্যক্তি স্থান ত্যাগ না করে নিম্নোক্ত দুরুদটি ৮০ বার পড়ে তবে তার জীবনের ৮০ বছরের সগীরা গুনাহ মাফ করে দেয়া হয় এবং ৮০ বছর নফল ইবাদতের সওয়াব তার জন্য বরাদ্দকৃত হয়।


দুরুদটি হচ্ছে..... আল্লাহুম্মা, সল্লি আলা, মুহাম্মাদিন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি, ওয়ালা আলিহি, ওয়াসাল্লিম তাসলিমা।



শুক্রবার দিন আসলে আমাদের পূর্ববর্তীগণ বিভিন্ন আমলের প্রতিযোগিতা করতেন। তারা শুক্রবারের আমলের অপেক্ষা সারা সপ্তাহ অপেক্ষা করতেন। কেউ কেউ বৃহস্পতিবার রাতে মসজিদে চলে যেতেন।

শুক্রবারের কিছু আমল----



*অন্যদিনের তুলনায় একটু আগে উঠা।
*মসজিদে জামাতের সাথে নামাজ আদায় করা।
*পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা আদায় করা।
*সবার আগে মসজিদে যেতে চেষ্টা করা।
*আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করা।
*দুই খুৎবার মধ্যবর্তী সময়ে মনে মনে দোয়া করা।
*রাসূল সাঃ এর প্রতি বেশি বেশি দুরুদ পড়া।
*সূরা কাহাফের আমল করা।
*আসরের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত বিশেষ আমল দোয়া, দুরুদ, জিকির,তাসবীহ পাঠ করা।



আল্লাহ তায়লা আমাদেরকে শুক্রবারের আমলের গুরুত্ব বুঝার এবং বেশি বেশি আমল করে আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য অর্জন করার তাওফিক দান করুন---
আমীন---

কোন মন্তব্য নেই

Barcin থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.