১৮ তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার লিখিত প্রস্তুুতি : 18th Ntrca written preparation.
১৮ তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার লিখিত প্রস্তুুতি : 18th Ntrca written preparation.
নিবন্ধন পরীক্ষার প্রস্তুতি। |
আস্সালামু আলাইকুম! প্রিয় বন্ধুরা! আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আশা করি শিরোনাম দেখেই বুঝতে পেরেছেন আজ আমরা কি বিষয়ে আলোচনা করব। তা হচ্ছে শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার লিখিত প্রস্তুতি। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি।হয়ত আপনারা অনেকটা একসাথে ফুরফুরে ও চিন্তিত মেজাজে আছেন। কারণ গত কয়েকদিন আগে ১৭তম প্রিলিমিনারি পরীক্ষার রেজাল্ট পেয়েছেন। আবার সামনে লিখিত পরীক্ষার টেনশন। যা হোক চিন্তার কোনো কারণ নেই। প্রিলিতে যেহেতু টিকেছেন আশা করা যায় লিখেতেও টিকবেন। তবে ১৮তম লিখিত পরীক্ষায় ভালো করার জন্য কিছু ব্যপার জানা আবশ্যক। যে কোনো পরীক্ষায় ভালো করতে এগুলো জানা দরকার।
তাহলে কীভাবে প্রস্তুতি নিলে আপনি ১৮ তম শিক্ষক নিবন্ধন লিখিত পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করতে পারবেন তা নিয়েই আমাদের আজকের আলোচ্য বিষয়। তাহলে চলুন জেনে নেই।
বিসিএস, শিক্ষক নিবন্ধন, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষাসহ যে কোন চাকুরির পরীক্ষায় ভালো করার পূর্ব শর্ত হলো উক্ত পরীক্ষার সিলেবাস সম্পর্কে জানা। তার পরবর্তী কাজ হলো প্রশ্ন ব্যাংক কিনে প্রশ্ন সমাধান করা। এই ২টা কাজ যে পরীক্ষার্থী করতে পারবে,ধরে নিন পরীক্ষায় তার সফলতা ৮০% নিশ্চিত হয়ে গেল।
বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রস্তুতি কীভাবে নিবেন তা জানতে ক্লিক করুন।
নিবন্ধন পরীক্ষার লিখিত সিলেবাস যেখানে পাবেন।
সিলেবাস পাওয়ার জন্য NTRCA এর ওয়েব সাইট ভিজিট করতে পারেন বা গুগোলে ১৬ তম নিবন্ধন পরীক্ষার লিখিত সিলেবাস লিখে সার্চ দিলেই পাবেন। এবার সিলেবাসের আলোকে কলেজ পর্যায়, স্কুল পর্যায় ও স্কুল পর্যায়-২, আপনি যে ক্যাটাগরিতে পরীক্ষা দিবেন সে আলোকে টপিকস ভিত্তিক পড়াশোনা শুরু করুন। অর্থাৎ বাংলা, ইংরেজি,সাধারণ জ্ঞান ও গণিতের যে অধ্যায় বা টপিকসের কথা সিলেবাসে আছে সে অধ্যায়গগুলো পরিপূর্ণভাবে পড়ে ফেলুন। তবে বিস্তারিত পড়ার আগে অবশ্যই কি কি ধরণের প্রশ্ন পূর্বের শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় এসেছে তা দেখে নিন প্রশ্ন ব্যাংক থেকে।
একটা কথা মনে রাখবেন শর্টকাট পড়লে শর্টকাট ফলাফলই আশা করা যায়। যেহেতু লিখিত পরীক্ষার উপর ভিত্তি করে জাতীয় মেধা তালিকা নির্ধারন করা হবে, তাই এখানে সংক্ষিপ্ত পথ গ্রহণ না করে ভালো করে প্রস্তুতিটা নেয়া উচিৎ।
প্রশ্ন সমাধান করার গুরুত্ব।
আপনি যে বিষয়ে পরীক্ষা দিবেন সে বিষয়ে প্রশ্ন কেমন হয় তা যদি আপনার জানা না থেকে তবে চিন্তা আর টেনশনে সহজ এবং পারা প্রশ্নের উত্তর ভুলে যাবেন। আত্মবিশ্বাস থাকবেনা। মনে হবে কিছুই যেন পারেন না। তারপর যথারীতি পরীক্ষা শুরু হলে প্রশ্ন দেখে আপনি এমন ধাক্কা খাবেন যেন অন্তত ১০-১৫ মিনিট স্থির হতে পারবেন না। তাছাড়া সব কিছু বুঝতে বুঝতে ১০ মিনিট চলে যাবে পরীক্ষার হলে। পরীক্ষা দিয়ে বাসায় এসে দেখবেন আপনি ভাবছেন একটা আর প্রশ্ন কর্তা বোঝাতে চেয়েছেন আরেকটা। আপনি হয়ত কম লিখেছেন নয়ত বেশি লিখেছেন। অর্থাৎ পরীক্ষার শুরুতে যেমন চিন্তায় ছিলেন পরীক্ষা দিয়ে যেন তা দ্বিগুণ করেছেন।
মোট কথা, পরীক্ষার আগে প্রশ্ন সমাধান করা ছাড়া কোনো বিকল্প পথ নেই। যতই পড়া শোনা করেন প্রশ্ন সমাধান না করলে একটি ঘাটতি আপনার থেকেই যাবে। যে কোনো পরীক্ষায় অবতীর্ণ হওয়ার জন্য তার সিলেবাস, মানবন্টন ও প্রশ্নের ধরণ জানা আবশ্যক।
শিক্ষক নিবন্ধন লিখিত পরীক্ষার জন্য যেভাবে প্রস্তুতি নিবেন।
সবার আগে বলব আপনি লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন তার মানে আপনাকে লিখে লিখে প্রস্তুতি নিতে হবে। যদি এমসিকিউ পরীক্ষার মত শুধু পড়ে যান তবে মাথায় আসবে কিন্তু কলমে আসবে না। বিভিন্ন রকম চিন্তা আসবে। সহজ বানানে ভুল করবেন। তাই পড়ার সময় লিখে লিখে পড়বেন।সবচেয়ে ভালো হবে নোট করে করে পড়লে তাহলে পরীক্ষার আগে শুধু রিভিসন দিলেই হবে।
কলেজ পর্যায় :-
শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় স্কুল পর্যায় ও স্কুল পর্যায়-২ এর তলনায় কলেজ পর্যায়ের প্রশ্ন একটি গভীর ও তথ্যবহুল হয়। প্রস্তুতিটাও একটু গভীর ভাবে নিতে হবে। কলেজ পর্যায়ের যে বিষয়গুলো আছে সেগুলো ভালো করে পড়বেন। বাংলার জন্য অবশ্য নবম দশম শ্রেণির ব্যাকরণ বই অনুসরণ করবেন। অন্য বিষয়ের টপিকসগুলোর জন্য অনার্স পর্যায়ের বই থেকে সাহায্য নিতে পারেন। চুড়ান্ত প্রস্তুতির জন্য বাজার থেকে একটি গাইড কিনে নিতে পারেন। তাছাড়া বিসিএস সহ যত চাকুরি পরীক্ষার লিখিত প্রশ্ন আছে এগুলো কলেজ পর্যায়ের জন্য অনেকটা গুরুত্ব রাখে। বিশেষ করে যে বছর আপনি পরীক্ষা দিচ্ছেন, সে বছর অন্যান্য চাকুরির পরীক্ষার লিখিত অংশে, যে বিষয়ের উপর প্রশ্ন আসে তা যদি আপনার সিলেবাস থেকে হয়ে থাকে,তবে সেগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। আগে সিলেবাস জানবেন, তারপর প্রশ্নের ধরণ, তারপর প্রশ্ন সমাধান। এবার বিভিন্ন বই থেকে বিস্তারিত পড়ুন। টপিকসগুলো বারবার রিভিসন দিন আর লিখে লিখে পড়ুন অন্যথায় পরীক্ষায় আত্মবিশ্বাসের সাথে লিখতে পারবেন না।স্কুল পর্যায় :-
স্কুল পর্যায়ের প্রস্তুতি অনেকটা সহজ কলেজ পর্যায়ের তুলনায়। আপনার সিলেবাস অনুযায়ী এইটএসসি পরীক্ষার বোর্ড বই গুলো থেকে বিষয় ভিত্তিক পড়ে নিন। সাথে নবম দশম শ্রেনির ব্যাকরণ আর ৭-৯ম শ্রেনির গণিত। এগুলো সামাধান করুন। পাশাপাশি প্রশ্ন ব্যাংক সমাধান করুন। এ বছর বিভিন্ন পরীক্ষায় যে টপিকস নিয়ে প্রশ্ন এসেছে তা আপনার সিলেবাসে থাকলে, এগুলোর প্রতি গুরুত্ব দিন।
তাহলে সিলেবাস জানা, প্রশ্নের ধরণ জানা, প্রশ্ন সমাধান করা আর সিলেবাস অনুযায়ী টপিকস পড়া হচ্ছে আপনার লিখিতের প্রস্তুতি। সাথে অবশ্যই প্রতিদিন রিভিসন আর লিখে লিখে পড়তে হবে। লিখার অভ্যাস না করলে বিপদে পড়বেন। এগুলো করতে পারলে আপনি সফল হবেন ইন শা আল্লাহ।
স্কুল পর্যায়-২ :-
স্কুল পর্যায়-২ এর প্রশ্ন আরও সহজ হয়। ভালো ফলাফল পেতে প্রশ্ন সমাধান করবেন। আপনার সিলেবাস বুঝে বিষয় ভিত্তিক প্রস্তুতি নিবেন। স্কুল পর্যায়ের মত প্রস্তুতি নিলে আপনি ভালো করতে পারবেন। তাছাড়া সিলেবাস অনুযায়ী আপনার গণিত, বাংলা, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞান সমাধান করুণ। অবশ্যই প্রতিদিন পড়ার চেষ্টা করবেন। বারবার রিভিসনে রাখবেন আর লিখে লিখে পড়বেন।
জুনিয়র মৌলোভী / ক্বারি লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি কীভাবে নিবেন :-
আপনাদের তো আরবি পরীক্ষা হবে। কুরআন, হাদিস, ফিক্বহ ও আরবি ভাষা ও ব্যাকরণ। সবচেয়ে ভালো করতে সিলেবাস অনুযায়ী শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আগে কোরআন, হাদিস, আরবি ইত্যিদির অনুবাদ শিখুন। তার পর প্রশ্নের ধরণ বুঝে প্রস্ততি নিন। যেহেতু আরবি বেশি মনে থাকেনা কাই প্রতিদিন নিয়মিত রিভিসন দেওয়া আবশ্যক। এভাবে চেষ্টা করেন ইন শা আল্লাহ সফল হবেন।
পরিশেষে যারা ১৮তম নিবন্ধন লিখিত পরীক্ষা দিবেন তাদেরকে বলব, আশা ছাড়বেন না। সবাই পড়া শুনা করছে বা আপনার চেয়ে পারে এসব ভেবে নিজেকে ছোট করবেন না। আপনার কাজ হচ্ছে সময় নষ্ট না করে শুধু চেষ্টা করা। আপনি চেষ্টা চালিয়ে যান, আপনার চেষ্টার ফল আপনি অবশ্যই পাবেন। যে যতটুকু চেষ্টা করে সে ততটুকু পাবেই। সুতারাং অনর্থক নিজেকে দুর্বল ভেবে কষ্ট পাবেন না। সময়ও নষ্ট করবেন না। সকলের প্রতি শুভ কামনা রইল। আল্লাহ হাফেজ।
Tags
18th ntrca written exam.
১৮তম নিবন্ধ লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি।
নিবন্ধন পরীক্ষার প্রস্তুতি।
কীভাবে লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি নিবেন।
কোন মন্তব্য নেই