ক্যানসার কি? ক্যানসার কেন হয়? ক্যানসার থেকে বাঁচতে করণীয় ।
ক্যানসার কি ? ক্যানসার কেন হয়? ক্যানসার থেকে বাঁচতে করণীয়
আসসালামু
আলাইকুম ! আশা করি সবাই ভালো আছেন।আলহামদুলিল্লাহ!মহান রবের অনুগ্রহে আমিও ভালো আছি। আজকের লেখাটির একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রিথিবীবাসিকে মরণব্যধি ক্যান্সার বিষয়ে সতর্ক করা।আশা করি নিজে জেনে, শেয়ার করে অন্যকে জানাবেন।চলুন মূল আলোচোনায় চলে যাই।
বিশ্বব্যপি
ক্যানসার একটি আতঙ্কের নাম।কারণ ক্যানসার নিরাময়ে এখনো তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য মেডিসিন আবিষ্কার হয়নি তবে রোগ নির্ণয়ে অনেক সফলতার সাক্ষর রেখেছে।এই রোগের মৃত্যুহার অন্যসব রোগের থেকে বেশি।তবে যদি ক্যানসার প্রথম দিকে ধরা পড়ে তবে এর চিকিৎসা বিভিন্নভাবে করা হয়ে থেকে।দূঃখজক হলেও সত্য যে, ক্যানসার প্রথম
দিকে সহজে নির্ণয় করা যায়না।ফলে ক্যানসারে মৃত্যু অনেক বেশি দেখা যাছে। ক্যানসার বিভিন্ন ধরণের হয়ে থাকে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের দাবি , প্রায় ২০০ রকমেরও অধিক ক্যনসার রয়েছে।প্রতিটির জন্য রয়েছে আলাদা চিকিৎসা।এই সব ক্যানসার নির্ণয় করা এবং চিকিৎসার জন্য বিজ্ঞানীগণ ব্যপক গবেষ্ণণা করে যাচ্ছেন। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা WHO এর ২০১৮ সালের একটি তথ্যমতে প্রতিবছর ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ১৩ লাখ মানুষ মারা যান। আরেকটি তথ্যে জানা যায় ক্যানসারে আক্রান্ত লোকদের মধ্যে শতকরা ৭০ ভাগের বয়স ৬০ বছরের উপরে।
ক্যানসার
কি?
ক্যানসার
অথবা কর্কটরোগ মূলত অনিয়ন্ত্রিত কোষবিভাজন সংক্রান্ত একটি রোগ।সহজ কথায় বলতে গেলে , সকল প্রাণীর শরীর অসংখ্য কোষ নিয়ে গঠিত, এই কোষগুলো একটি নির্দিষ্ট সময় পর মারা যায়,তারপর
আবার সেখানে নতুন কোষের জন্ম হয়। সমস্যার সৃষ্টি হয় তখন,যদি
কোষগুলো নিয়ন্ত্রিতভাবে আবার জন্ম না হয়ে ,অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়তে থাকে। কোষগুলো
বাড়তে থাকলে মাংসের নিচে এক ধরণের টিউমারের মত দলা দলা জমতে থাকে।টিউমার মূলত ক্যানসারের পুর্ব সংকেত এবং তা দিন দিন সম্প্রসারিত হতে থাকে, এক পর্যায়ে সমস্ত শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। তখন আর কোনো চিকিৎসা করার উপায় থাকেনা। কারণ যখণ এটা অল্প থাকে তখন চিকিৎসকগণ আক্রান্তস্থানটি কেটে ফেলে দেন কিন্তু সারা শরীরে ছড়িয়ে গেলে তা আর সম্ভব হয় না।এই জন্য মানুষ মনে করেন ক্যানসার হলে মৃত্যু অনিবার্য।
ক্যানসার
কেন হয়?
ক্যানসার
কেন হয় তা একেবারে নির্দিষ্ট করে বলা যায় না তবে ক্যানসার হওয়ার কিছু সম্ভব্য কারণ উল্লেখ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা WHO এখানে তা উল্লেখ করা হলো। বিভিন্ন ধরণের রাসায়নিক বর্জ পদার্থ,তেজস্ক্রিয় পদার্থের
প্রভাব,ধুম পান,তামাক,কৃত্তিম রঙ, কীটনাশক বিভিন্ন মেডিসিন, ভাইরাস ও খাদ্যে ভেজাল
ফরমালিনের ব্যবহার ইত্যাদির কারণে বিশ্বব্যপি ক্যানসারের প্রকোপ বাড়ছে।এছাড়া অনেক সময় ক্যানসার পারিবারিকভাবে বা বংশগতভাবে হওয়ার আসংকা রয়েছে। যেমন কোনো মায়ের যদি স্তন ক্যানসার হয়ে থাকে তবে তার মেয়ের স্তন ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।অথবা বাবা মায়ের কারো ক্যানসার হলে পরিবারের যে কারো ক্যানসার হওয়ার চান্স বেড়ে যায়। তবে হতে হবে বা হবেই এমনটি বলা যায়না। এটা ডাক্তার ও গবেষকদের গবেষণার
ফল। যেমন বিশ্ববিখ্যাত সেলিব্রিটি ও অভিনেত্রী এঞ্জেলিনা
জলির মায়ের স্তন ক্যান্সার ছিল, এখন তারও স্তন ক্যান্সার ধরা পড়েছে ফলে তাকে তার ২টি স্তনই কেটে ফেলতে হয়েছে। তবে সবার বেলায় যে এমনটি হচ্ছে বা হবে তা নয়। অবশ্য সতর্ক থাকা দোষণীয় নয়।
ক্যানসার
থেকে বাঁচতে করণীয়
একটি
কাজ করে ক্যান্সার থেকে বাঁচা যাবে না। একা একাও বাঁচা যাবে না। ক্যান্সার থেকে বাঁচতে হলে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।তবে প্রতিরোধ বা চেষ্টা শুরু করতে হবে নিজ থেকেই ,তারপর হয়ত সবাই এগিয়ে আসবে।সবাইকে সতর্ক করতে হবে। ক্যান্সার প্রতিরোধে আপনার আমার করণীয়।
যেহেতু
আমাদের খাদ্যাভ্যাসে সাথে ক্যানসারে সম্পর্ক গভীরভাবে জড়িত তাই আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকাকরণের ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিতে হবে। যেমন মদ খাওয়া, ধুম পান,পান
সুপারি,জর্দা,সাদা
পাতা ,অতিরিক্ত চিনি, খাবারে ফুড কালার দেওয়া, ইত্যাদি এসব বন্ধ করতে হবে।বেশি বেশি শাক সবজি খেতে হবে ।পারলে মাংস খাওয়া বন্ধ করে দিন। ভেজিটেরিয়ান হয়ে যেতে পারেন। এছাড়া নিয়মিত শরীর চর্চা করতে হবে।যেমন, দৌড়ানো, সাইকেল চালানো,হাটা ইত্যাদি
নিয়মিত করুন। পরিমিত খাবার খেতে হবে।রাস্তা ঘাটের ধুলোবালি মাখা খাবার পরিহার করে চলা। বেশি বেশি ফুলমূল ও আঁশ জাতীয়
খাবার খাওয়া।
সচেতনতামূলক কাজ
নিয়মিত
ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া। সবসময় সম্ভব না হলেও কোনো অস্বাভাবিক অবস্থার দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। যেমন, প্রচণ্ড দুর্বলতা,অস্বাভাবিকভাবে ওজন কমে
গেলে,অস্বাভাবিক শরীর
ব্যথা হলে, অনেক রক্তপাত
হলে, দীর্ঘস্থায়ী কাশি
হলে এবং গলে ভেংগে গেলে।তবে ৫০ বছরের পর থেকে অবশ্যই নিয়মিত ডাক্তার দেখাতে হবে।কারণ তখন ক্যান্সারের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।যদি ক্যান্সার প্রথম দিকে ধরা না পরে তাহলে রোগীকে বাঁচানো যায় না।তাই আসুন নিজে জানি এবং অন্যকে জানিয়ে সতর্ক করি। আর সব কথার মুল কথা হচ্ছে নিজ ধর্মের প্রতিটি অনুশাসন মেনে চলুন তাহলে দেখবেন আপনি আল্লাহ প্রদত্ব একটি রুটিনে চলছেন।যেহেতু তিনি আমাদের দেহের সৃষ্টিকর্তা, সুতরাং তিনি জানেন কি করলে এবং কীভাবে চললে এই দেহ নামের মেসিনটা ভালো মত চলবে।
আজ আর নয়, আবার দেখা
হবে অন্য কোনো একটি বিষয় নিয়ে ইনশা আল্লাহ!
আল্লাহ
হাফেজ।
কোন মন্তব্য নেই