ঢাকা শহরের কোন এলাকার বাসা ভাড়া কেমন?

ঢাকা শহরের কোন এলাকার বাসা ভাড়া কেমন?


ঢাকার কোথায় বাসা ভাড়া কম,ঢাকা শহরের বাসা ভাড়া কোন এলাকায় কত? Fakhrul Academy, infobd266,


আসসালামু আলাইকুম!

আশা করি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। হয়ত বাসা ভাড়া করার টেনশন নিয়ে আপনি লেখাটি পড়তে এসেছেন। হেটে হেটে বাসা ভাড়া করা সত্যিই অনেক ঝামেলার কাজ। এছাড়া আমাদের দেশে এখনও বাসা ভাড়া করার কোনো সহজ উপায় বের হয়নি। যা হয়েছে তা বড়লোকের বিরাট কারবার। অর্থাৎ টাকা হলে আপনি বাসা পাবেন।


ঢাকার কোথায় বাসা ভাড়া কম


 সে বাসা অনেক ভালো মানেই হবে কিন্তু এরকম বাসায় থাকার সবার হয়ত সক্ষমতা নেই। তাই মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য হেটে হেটে বা সরাসরি বাসা দেখে দেখে বাসা ভাড়া যাচাই করে নেয়াই ভালো।  এই কারনেই আমরা বের হওয়ার আগে একটু অনলাইনে সার্চ করে দেখে নেই।  আমিও তাই করি। আমি অনেক এলাকায় বাসা খুঁজেছি। তাই আমার দেখা বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকেই মূলত এখানে কিছু লিখব। হয়ত কারো সামান্য হলেও উপকার হবে।


আগে আমার একটি বাস্তব জীবনের গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।  আমি ঢাকায় এসে বাসা খোঁজ করার সময় অনলাইনে খুঁজে কিছু পাইনি। ফলে প্রথমবার যখন বাসা ভাড়া করি তখন বাসার মালিক যা চেয়েছিল তাতেই আমি রাজি হয়ে যাই। অবশ্য বলেছিলাম এর কম হবে কিনা? উনি বললেন না হবে না। হয়ত আমি চলে আসলে উনি কমিয়ে রাখতেন।  কারণ ঐ বাসায় আগে যারা ভাড়া ছিলেন তারা আমাদের চেয়ে একহাজার টাকা কম দিয়ে ছিলেন। ফলে যখন আমি তার কথা মতো রাজি হলাম তখন থেকেই উনি আমার সাথে খুবই ভালো আচরণ করতে শুরু করলেন অবশ্য যে কয়মাস ছিলাম অনেক ভালো আচরণ পেয়েছি।  এটা সবটাই ছিল টাকার খেলা। কারণ  অন্য যারা ছিলো তাদের সাথে সবসময় ঝামেলা লেগেই থাকত কিন্তু আমাদের সাথে বাসা ভাড়া বা অন্য কোনো ব্যপার নিয়ে কোনো ঝামেলা হয়নি। বাসাটি ছিল ৬ তলায়।  ভাড়াও বেশি তাই ওখান থেকে শিফট করা।
এবার আসি আসল কথায়।

ঢাকা শহরের কোন এলাকার বাসা ভাড়া কেমন?


আগেই বলি মোহাম্মদ পুরের বাসা ভাড়া নিয়ে।

মোহাম্মদ পুরের কোন এলাকায় বাসা ভাড়া কেমন?


আমি এখানে মূলত সবচেয়ে কম কত টাকায় বাসা ভাড়া পেতে পারেন এবং সেটা কোন এলাকায় এরকম তথ্যগুলোই শেয়ার করব। তাছাড়া আপনাকে অবশ্যই এটা জানতে হবে অনেক সময় অতি অনূন্যত এলাকার বাসা ভাড়া অনেক বেশি হয় যোগাযোগ ব্যবস্থা ও বিল্ডিংয়ের কারুকাজ ও সৌন্দর্যের কারণে। আমি এখানে মূলত সাধারণ বাসা ভাড়ার কথাই শেয়ার করব।

আপনি যদি মোহাম্মদ পুর নূর জাহান রোড বা সুলতানা রাজিয়া বা এর পাশাপাশি বাসা ভাড়া করতে চান তবে মোটামুটি  ১১-১২ হাজার টাকায় দুই রোমের বাসা এক বাথরুম পাবেন। তিন রোম আর দুই বাথরুম পেতে ১৪-১৫ হাজার গুণতে হবে।

আর যদি আপনি বসিলা বা আটি বাজারের দিকে যান তবে অনেক কম দামে বাসা পেতে পারেন। যেমন ঐ দিকে ডাইনিং স্পেস, একটি কিচেন, বারান্দা, দুই রোম, এসব মিলে মাত্র ৫ হাজার টাকায় পেতে পারেন। সমস্যা হবে যাতায়াত ব্যবস্থা নিয়ে। হয়ত কিছুদিন থেকে চলে আসতে হবে। তবে ওখানে আপনি একদম তাজা তরকারি এবং দুধ, মাছ ইত্যাদি পাবেন।


এবার বলব মিরপুর নিয়ে।

মিরপুরের কোন এলাকার বাসা ভাড়া কত?


তুলনামূলক ভাবে ঢাকা শহরের মধ্যে মিরপুরের ভাড়া একটু কম। কারণ মনে হয়, মিরপুর সব অফিস আদালত থেকে অনেক দূরে। তবে যে কারণেই হোক এখন মিরপুরের ভাড়াও দিন দিন বাড়ছে।

মিরপুর ৬, ৭, ২, এই এলাকাগুলো তে আপনি ৮-১০ হাজার টাকায় দুই রুমের বাসা পেতে পারেন। আর দুয়ারি পাড়া, আলোকদির দিকে গেলে হয়ত আরো কমে পাবেন তবে ইস্টার্ন হাউজিং এর দিকে ভাড়া একটু বাড়বে। তাছাড়া ভাড়া সম্পুর্ন ডিপেন্ড করে বিল্ডিংয়ের কাজ সৌন্দর্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর। অনেক অনূন্যত এলাকায়ও যদি ভালো মানের বিল্ডিং হয় ভাড়া অনেক বেশি হয়। তবে এই এলাকাগুলোর মধ্যে মিরপুর ৬ ও ৭ এ অনেক বাড়ির ভাড়া বেশি আছে। এখানে ভালো মানের বাসাও রয়েছে। তবে রূপনগর আবাসিক এলাকা,  পল্লবী,বা শিয়াল বাড়ি এলাকা পর্যন্ত আপনি ১০ থেকে ১১ হাজারে অনেক ভালো বাসা ভাড়া পাবেন।


আর মিরপুর ১২ বা কালসী এর দিকে ১০ থেকে ১১ হাজার টাকায় দুই/ তিন রুমের ভালো বাসা পেতে পারেন।
তবে মোহাম্মদ পুরের ইকবাল রোড, সালিমুল্লাহ রোড, খালজি রোড, গজনি রোড, এই সমস্ত এলাকার বাসা ভাড়ার জন্য আপনাকে ১৪ থেকে ১৫ হাজার গুনতে হবে।


মিরপুর ১৪ এর দিকে কিছু ভালো মানের স্কুল থাকার কারণে, কাফরুল, ইব্রাহিম পুর, কাচা বাজার ইত্যাদি এলাকায় সাধারণ দুই বা তিনরুমের বাসার দাম ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। আর পলাশ নগর এর দিকে গেলে আবার কমে পাবেন। পলাশ নগরে আপনি ৮ থেকে ১০ হাজারে দুই রুমের অনেক ভালো ফ্যামিলি বাসা পাবেন।


এবার বলি ধানমণ্ডি, কলাবাগান এলাকার কথা।


ধানমন্ডি, কলাবাগান, শংকর, জিগা তলা, ইত্যাদি এলাকাগুলোতে বাসা ভাড়া একটু বেশি।  সাধারণ বাসাও কম তাই ভাড়াও বেশি। তবে আপনি ১৫ থেকে ২০ হাজারে মোটামুটি ভালো বাসা পেতে পারেন। এই সমস্ত এলাকায় ১৫ হাজারের নিচে বাসা পাওয়ার আশা না করাই ভালো।

এবার বলব আজিমপুর, লালবাগ, চানখারপুল, বকশীবাজার ইত্যাদি কোন এলাকার বাসা ভাড়া কেমন?
এক কথায় বলতে গেলে এই সমস্ত এলাকায় মানুষ বেশি থাকে। এলাকা সুবিধার বলা যায়না। রাস্তায় বের হলে রিকক্সার জন্য হাটা যায় না। বৃষ্টি হলে রাস্তায় পানি উঠে যায়। তার পরেও এসব এলাকার ভাড়া তুলনামূলক ভাবে বেশি। অতি সাধারন এবং নিচ তলার বাসা ভাড়া করতে গেলে আপনাকে ১১ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা গুনতে হবে। বাসা দুই তিন রুমের হতে পারে। আর মধ্যম টাইপের বাসার জন্য আপনাকে ১৫ হাজারের বেশি গুনতে হবে।


ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকার বাসা ভাড়া কেমন?


যাত্রাবাড়ী, শনির আখরা, সাইনবোর্ড ইত্যাদি এলাকার ভাড়া অনেক কম। এবং ঢাকায় আসতে ফ্লাই অভারে ২০ থেকে ২৫ মিনিট লাগবে। দুই থেকে তিনরুমের বাসা আপনি ৮ থেকে ১০ হাজারে পাবেন। কোথাও কোথাও আপনি ৬ থেকে ৭ হাজার টাকায়ও দুই রুমের বাসা পেতে পারেন। আমার এক বন্ধুরা শনির আখরা ৮ হাজার টাকায় তিনরুম নিয়ে থাকে।


বনশ্রী, রামপুরা এলাকার বাসা ভাড়া কত?


আমি রামপুরা, বাড্ডা,  বনশ্রী ইত্যাদি এলাকার সম্পর্কে বাস্তব অভিজ্ঞতা নিতে পারিনি তবে নির্ভরশীল মাধ্যমে জানতে পেরেছি ওখানে আপনি ৮ থেকে ১০ হাজার টাকায় সাধারণ বাসা ভাড়া পেতে পারেন। আর ১৫ হাজার টাকায় জেনেরেটর, লিফট, গাড়ির গ্যারেজ ইত্যাদি সুবিধাসহ বাসা ভাড়া নিতে পারবেন।



উত্তরা, বসুন্ধরার মতো এলাকাগুলোর বাসা ভাড়ার কথা আর না ই বা লিখলাম। কারণ এ সমস্ত এলাকার ভাড়া কেমন হতে পারে মোটামুটি সবার জানা আছে।



মূলত এই লেখাটি ঢাকাবাসীর জুন্যই লেখা। যদি কেউ উপকৃত হয়ে থাকেন তবে আজকের আমার সময়টা স্বার্থক হুবে। তবে একটি জিনিস অবুশ্যই মনে রাখুবেন, এই ভাড়া কিন্ত দিন দিন বাড়বেই কভু কমার নয়, তাই একটু বাড়িয়ে বাজেট করুন নয়ত চাপে পড়বেন ভাইয়া। আজকের মত এখানেই বিদাই নিচ্ছি। শুভ হোক আপনাদের জীবন।

আল্লাহ হাফেজ


কোন মন্তব্য নেই

Barcin থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.