মুজিব বর্ষ রচনা
মুজিব বর্ষ রচনা
মুজিব বর্ষ রচনা |
প্রিয় বন্ধুরা ! আশা করি সবাই ভালো আছেন। আজকের ব্লগে থাকছে মুজিব বর্ষ নিয়ে একটি রচনা । যা এখনো কোনো বি রচনা করেনি বা কোনো সাইটে কেউ মুজিব বর্ষ নিয়ে রচনা লিখেনি। তাহলে পড়ে দেখুন আমাদের ইউনিক আয়োজনটি। ভাল খারাপ মন্তব্য জানাতে ভুলবেন না। তাহলে আমরা আরো ভালো কভালো করার চেষ্টা করব।
বিঃদ্রঃ রচনাটি মূলত মুজিব বর্ষ উদযাপন উপলক্ষে ১৭ মার্চ থেকে কি কি হবে তার উপর আগাম তথ্যের ভিত্তিতে রচিত। অনেকেই মুজিব বর্ষ নিয়ে রচনা চেয়েছেন তাই তাদের ধারণা দেয়া হলো। ১৭ মার্চের পর আপডেট করা হবে।
ভূমিকা :
গানে গানে বলে যাই..
"যদি রাত পোহালে শোনা যেত, বঙ্গবন্ধু মরে নাই,
যদি রাজপথে আবার মিছিল হতো, বঙ্গবন্ধুর মুক্তি চাই।
তবে বিশ্ব পেত এক মহান নেতা, আমরা পেতাম ফিরে জাতির পিতা।"
১৭ ই মার্চ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর শাহাদাৎ এর শত বছর পূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার ২০২০-২১ সালকে মুজিব বর্ষ ঘোষণা করেছেন। মুজিব বর্ষ উদযাপন উপলক্ষে মহাসমারোহের আয়োজন চলছে। নেয়া হয়েছে প্রায় ২৯৬ টি পরিকল্পনা সংবলিত এক মহাপরিকল্পনা। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মুজিব বর্ষ উদযাপন করা হবে। এতে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বের নানা দেশের নানা গুণিজন ও নেতা কর্মীরা। ছিলেন রাষ্ট্রদূত ও প্রধানমন্ত্রীরাও।
মুজিব বর্ষ ১০ জানুয়ারি ২০২০ :
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উলক্ষে ১০ জানুয়ারি আয়োজন করা হয় তাঁর প্রতীকী আগমন যার মাধ্যমে শুরু হয় ক্ষণগণনা। বিমান থেকে নামানো হয় বঙ্গবন্ধুর আলোকচিত্র যাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানানো হয়।
মুজিব বর্ষে ১৭ মার্চ ২০২০ :
১৭ মার্চ থেকে প্রত্যুষে শুরু হয় মুজিব বর্ষ উদযাপন এর মূল আয়োজন। এ দিন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রাধানমন্ত্রী ও নেতা নেত্রীগণ মুজিব বর্ষ উদযাপন করতে বাংলাদেশ আসেন। একই সাথে ঢাকা ও টুঙ্গিপাড়ায় মুজিব বর্ষ উদযাপন শুরু হয়। মূল অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় শহীদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ভুটানের রাজা, ভারতের কংগ্রেস নেত্রী সোনীয়া গান্ধী ও প্রণবমূখার্জীসহ অনেক দেশের নেতা নেত্রীগণ মুজিব বর্ষ অনু্ষ্ঠানে উপস্থিত হন। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক দল তাদের সব অভিজ্ঞতার ঝলকানিতে অনুষ্ঠান করে তুলে আরো আনন্দময়। এ যেন ববঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ। দলমত নির্বিশেষে মানুষের ঢল নামে মুজিব বর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে। মুজিব বর্ষ উপলক্ষে উক্ত বর্ষকে স্বরণীয় করে রাখতে সরকার নানা ঘোষণা দেন। তার মধ্যে একটি হচ্ছে ২০০ টাকার নোট প্রচলন। এর ফলে দেশের সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়েছে। এছাড়া মুজিব বর্ষ টুর্নামেন্ট, বিভিন্ন ইভেন্টের আয়োজন করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে সর্বসাধারণের নিকট তুলে ধরার জন্য তৈরি করা হয় বঙ্গবন্ধু ফিল্ম বা সিনেমা।
বিশ্বব্যাপী মুজিব বর্ষ উদযাপন
১২-২৭ নভেম্বর ২০১৯ প্যারিসে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক অঙ্গসংগঠন ইউনেস্কোর ৪০ তম সাধারণ অধিবেশনে ২৫ নভেম্বর সকল সদস্যদের উপস্থিতিতে যৌথভাবে বিশ্বব্যাপী মুজিব বর্ষ উদযাপন এর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। দেশের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন কর্মসূচির পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা তৃণমূল পর্যায়ে প্রচারের পাশাপাশি প্রতি বছরের মতই তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস, আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, জাতীয় শোক দিবস ,বুদ্ধিজীবী দিবস এবং জেল হত্যা দিবসও পালিত হয়। এছাড়াও বাংলাদেশ সরকার জন্মশতবার্ষিকী ও মুজিব বর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও প্রামাণ্যচিত্র বিশ্বব্যাপী প্রচার হয়। যাতে ইংরেজি সাবটাইটেল দেয়া ছিল। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থানরত বাংলা মায়ের সন্তানেরা মুজিব বর্ষ উদযাপন করে মুজিবীয় চেতনা ছড়িয়ে দেন বিশ্বময়।
মুজিব বর্ষ উদযাপন উপলক্ষে নানা আয়োজন এছাড়াও সাড়া দেশে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর অসমাপ্ত আত্মজীবনী এর উপর পাঠচক্রের আয়োজন করা হয়। ছবি আঁকা, বিতর্ক উৎসব, মুজিব বর্ষ রচনা প্রতিযোগিতা, নেতা হিসেবে মুজিবের পরিচয়, লেখক হিসেবে বঙ্গবন্ধুর পরিচয়, রাজনীতির মাঠে বিশ্বব্যাপী শেখ মুজিব এর অবদান, মোট কথা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জীবনীশক্তিকে বাংলাদেশের মানুষের মননে জাগিয়ে তোলা ও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলা গঠনের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়। বাংলাদেশকে বিশ্বদরবারে পরিচিত করানোর জন্য মূলত মুজিব বর্ষ উদযাপন করা হয়।এছাড়া বাঙালি জাতির জনককে বিশ্বের মানুষের কাছে তুলে ধরা হয় হয় তার অবদান ও কর্মকাণ্ডের সাথে পারিচিত করানোর মাধ্যমে।
মুজিব বর্ষের গুরুত্ব ও তাৎপর্য
বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭৫ এর ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের জন্য একটি কালো অধ্যায়। কিছু বিপদগ্রস্ত মানুষের বিপদগামী চিন্তার ফলে বাঙালি জাতি হারায় তার জনককে। সেই বুকভাঙা কষ্টের স্বীকৃতি স্বরূপ প্রতিবছর বাংলাদেশের জনগণ ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। ১৭ মার্চ ১৯২০ ছিল বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন। এই দিনটিকে সরকার জাতীয় শিশুদিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন হিসেবে পালন করা হয়। একটি জাতির জনককে স্বরণীয় বরনীয় করে রাখার জন্য তাঁর কীর্তি ও অবদান নিয়ে আলোচনা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যদি তাঁর জীবনাচরণ জাতির মাঝে আলোচনা করা না হয় তবে তারা ভুলে যাবে তাদের অতীত ইতিহাস। তারা ভুলে যাবে তাদের জন্য পূর্বপুরুষদের অবদান। দেশপ্রেম থেকে তারা অনেক দূরে হারিয়ে যাবে। ফলে দেশের প্রতি থাকবেনা কোনো ভালোবাসা। সর্বক্ষেত্রে দেখা দিবে দূর্নীতি অন্যায় অনাচার। দেশের শান্তি বিনষ্ট হবে। এই সুযোগে বিদেশে অপশক্তি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের উপর তাদের কালো থাবা ছুঁয়ে দিবে। জাতি হারাবে তাদের স্বাধীনতা। এ কারণে জাতির মাঝে সে জাতির জনকের ইতিহাস ও সংগ্রামী জীবন তুলে ধরার গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম।
মুজিব বর্ষের শিক্ষা :
স্বাধীনতা অর্জন করার চেয়ে রক্ষা করা আরো কঠিন। বঙ্গবন্ধু বলে গিয়েছিলেন আমি যদি না থাকি তবে তোমরা যার যা আছে তা নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করবে। বর্তমান সময়ে মুজিব বর্ষ উদযাপন করার উদ্দেশ্য হচ্ছে বাঙালি জাতির মাঝে বঙ্গবন্ধুর চেতনা জাগিয়ে তোলা। তিনি দেশ ও জাতির জন্য কীভাবে কাজ করেছেন সে শিক্ষা গ্রহণ করে ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের জীবনে কাজে লাগাবে। দেশকে বিদেশি অপশক্তির কালো থাবা থেকে রক্ষা করবে। দেশের অভ্যন্তরীণ যত অপশক্তি আছে তাদের প্রতিহত করে বাংলাদেশের অগ্রগতির চাকা ঘুরিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। দেশ ও জাতির মাঝে দেশ প্রেম জাগিয়ে তোলা। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক চেতনা বুকে লালন করা। বিপদগ্রস্ত নির্যাতন মানুষের পাশে যেভাবে বঙ্গবন্ধু দাড়িয়েছিলেন অনুরূপ কাজ করা। মোট কথা জাতির জনকের জীবনাচরণ দেশের জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দেয়াই হচ্ছে মুজিব বর্ষ উদযাপন করার উদ্দেশ্য।
এছাড়া মুজিব বর্ষে শিক্ষা রয়েছে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মজীবি ,পেশাজীবী, ছাত্রলীগ, নেতাআ কর্মী, রাজনীতিবীদ, লেখক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, গাআয়ক,অভিনেতাসহ সকল শ্রেনির বাঙালি অবাঙালি জাতির জন্য। কেননা বঙবন্ধুর জিবনে রয়ছী বৈচিত্রের পরশ।
এছাড়া মুজিব বর্ষে শিক্ষা রয়েছে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মজীবি ,পেশাজীবী, ছাত্রলীগ, নেতাআ কর্মী, রাজনীতিবীদ, লেখক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, গাআয়ক,অভিনেতাসহ সকল শ্রেনির বাঙালি অবাঙালি জাতির জন্য। কেননা বঙবন্ধুর জিবনে রয়ছী বৈচিত্রের পরশ।
উপসংহার :
স্লোগানে স্লোগানে কেঁপে উঠে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। "মুজিব আমার বিশ্বাস, মুজিব আমার চেতনা।" এ যেন মুজিবীয় চেতনায় পরিপূর্ণ বিশ্বাসী বাঙালি জাতি। শিশু, কিশোর, বৃদ্ধ, সকলেই মুজিব হারানোর বিরহে মুমূর্ষু আজ। আজ মুজিবকে না পেলেও তাঁর চেতনাধারণ করেছে বাঙালি জাতি। আমাদের উচিৎ বঙ্গবন্ধুর জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে অন্যায় অনাচার ও শোষণ উৎপীড়নের বিরূদ্ধে সজাগ হওয়া। দেশ ও জাতির উন্নয়নে নিজের প্রস্তুত করা। সময়মত নিজের সসর্বসহ দিয়ে দেশ ও জাতিকে সবধরনের অপশক্তি থেকে রক্ষা করা। এখন ছাত্রদের কাজ হচ্ছে সংস্কৃত ভাষায় " ছাত্রনং অধ্যানং তপং" লেখা পড়া করা।
ভাগ্য ভালো, অনেক আগেই শিক্ষা জীবন শেষ হয়েছে
উত্তরমুছুন