অনিয়মিত মাসিক কখন ভয়ের কারণ
অনিয়মিত মাসিক কখন ভয়ের কারণ
infobd266 |
নারীরা সাধারণত বিভিন্ন রকমের শারিরীক সমস্যার সম্মুখীন হন,তার মধ্যে একটি প্রধান সমস্যা হলো অনিয়মিত ঋতুস্রাব ।নারী শরীরে অনিয়মিত ঋতুস্রাব একটি প্রচলিত সমস্যা।
আর এ কারনে নারীদের বেশ চিন্তায় পড়তে হয়।আসুন আমরা জেনে নেই অনিয়মিত ঋতুস্রাব কাকে বলে। সাধারণত একজন নারীর জীবনে ঋতুচক্র শুরু হওয়ার পর থেকে ২১ দিন থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে যেটি হয় সেটি নিয়মিত ঋতুস্রাব। আর যদি ২১ দিনের আগে বা ৩৫ দিনের পরে হয় তবে সেটিকে অনিয়মিত ঋতুস্রাব বলে।
অনিয়মিত ঋতুস্রাব সাধারণত যৌবনের শুরুতে এবং যৌবনের শেষে হতে পারে। যৌবনের শুরুতে সাধারণত ১২ থেকে ২০ বছর বয়সে কারো শরীরের ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোন যদি অপরিপক্ব বা (প্রিমেচিউর) থাকে তবে অনিয়মিত ঋতুস্রাব হয়। আবার দেখা যায় নারী শরীরে মেনোপজ শুরু হওয়ার আগে এ ধরনের সমস্যা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতার কারণেও এই সমস্যা হতে পারে।অনেক ক্ষেত্রে এটা চিন্তার কারন হয়ে দাঁড়ায়।
অনিয়মিত ঋতুস্রাব এর কয়েকটি কারন উল্লেখ করা যেতে পারে।
যেমনঃ-
এই অনিয়মিত ঋতুস্রাব এর কারনে নারীদেরকে বেশ কিছু সমস্যায় পড়তে হয়।কিছু উল্লেখযোগ্য সমস্যা হচ্ছে-
এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।এক্ষেত্রে অনেকেই বুঝে উঠতে পারেনা কখন ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত।
নারীদের অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে,
- শরীরে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোনের তারতম্যের কারণে এই সমস্যা হয়।
- বিবাহিত নারীরা হঠাৎ জন্মনিয়ন্ত্রক ওষুধ বন্ধ করে দিলে হতে পারে।
- বিভিন্ন ধরনের মানসিক চাপের ফলে হতে পারে।
- শরীরের রক্ত কমে গেলে অর্থাৎ এনিমিয়া হলে অনিয়মিত মাসিক হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
- অনেকের ক্ষেত্রে ওজন বেড়ে গেলে এই সমস্যা হয়।
- জরায়ুর বিভিন্ন জটিলতার কারণে হতে পারে।
- সহবাসের সময় পুরুষের শরীর থেকে আসা বিভিন্ন রোগের কারণে হতে পারে। যেমন : গনোরিয়া, সিফিলিস ইত্যাদি।
- শরীরে টিউমার ও ক্যানসার ইত্যাদি অসুখে হতে পারে।
- প্রি মেনোপজের সময় হয়ে থাকে।
- যেসব নারী শিশুদের বুকের দুধ খাওয়ান সেসব নারীর অনিয়মিত ঋতুস্রাব হতে পারে।
অনিয়মিত মাসিকের কারণে কি কি সমস্যা হতে পারে
এই অনিয়মিত ঋতুস্রাব এর কারনে নারীদেরকে বেশ কিছু সমস্যায় পড়তে হয়।কিছু উল্লেখযোগ্য সমস্যা হচ্ছে-
- প্রতিমাসে নিয়মিত ঋতুস্রাব হয় না। এক মাসে রক্তপাত হলে হয়তো আরেক মাসে হয় না। অনেকের ক্ষেত্রে দুই-তিন মাস পরপর হয়ে থাকে।
- ঋতুস্রাব বেশি সময় ধরে হয়। কখনো অল্প রক্তপাত হয় আবার কখনোও বেশি হয়।
- সন্তান ধারণ ক্ষমতা হ্রাস পায়।
- অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ হতে পারে।
- এ ছাড়া মেজাজ খিটখিটে থাকা এবং অস্বস্তিবোধ তৈরি হয়।
- শরীরের ওজন বেড়ে যাওয়া।
অনিয়মিত মাসিক হলে করণীয়
এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।এক্ষেত্রে অনেকেই বুঝে উঠতে পারেনা কখন ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত।
নারীদের অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে,
যদি বছরে তিন বারের বেশি ঋতুস্রাব না হয়।
ঋতুস্রাব সাধারণত ২১ দিনের আগে এবং ৩৫ দিনের পরে হয়।
ঋতুস্রাবের সময় বেশি রক্তপাত হলে।
সাত দিনের বেশি সময় ধরে ঋতুস্রাব হলে।
ঋতুস্রাবের সময় খুব ব্যথা হলে।তখনই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
চিকিৎসক তখন সঠিক কারন জেনে ব্যবস্থা নিবেন। কারো ক্ষেত্রে যদি বেশি ওজনের জন্য এই সমস্যা হয় তবে ডায়েট ও ব্যয়াম করতে বলা হয়। অনেকের ক্ষেত্রে মেয়ের পাশাপাশি মাকেও পরামর্শ (কাউন্সিলিং) দেওয়া হয়। আর সন্তান ধারণক্ষম বয়সে সমস্যা অনুযায়ী চিকিৎসা করাতে হবে। বেশি রক্তপাত হলে আয়রন সাপ্লিমেন্ট দেওয়া হয়। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করা উচিত।
আর অবশ্যই নারীদের জীবন যাপনে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে।
- শরীরের ওজন সবসময় নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
- মানসিক চাপ মুক্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে।
- পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে।
- আয়রন জাতীয় খাবার খেতে হবে যাতে শরীরে পরিমিত পরিমাণে রক্ত থাকে।
সকল নারীই ভালো থাকুক, সুস্থ থাকুক এই কামনা।
ধন্যবাদ সকলকে।
আমাদের এখানে লেখা পাঠিয়ে আয় করতে যোগাযোগ করুন।
কোন মন্তব্য নেই