সাবজেক্ট রিভিউ: জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগ

 সাবজেক্ট রিভিউ: জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগ

সাবজেক্ট রিভিউ: জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগ

জাপানিজ স্টাডিজে কেন পড়বেন 

যারা এ বছর বি এবং ডি ইউনিটে চান্স পেয়েছো তাদের সবাইকে অভিনন্দন। চান্স পেয়ে সাবজেক্ট সিলেকশন নিয়ে তোমাদের বরাবরের মতই বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। সেই বিড়ম্বনা দূর করার প্রয়াস হিসেবে তোমাদের জন্য নিয়ে এলাম সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত “জাপানিজ স্টাডিজ” এর সাবজেক্ট রিভিউ। প্রবীণতম এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীনতম বিভাগ জাপানিজ স্টাডিজ। জেনে নেই কেন ভর্তি হব জাপানিজ স্টাডিজে। 


★সময়সীমাঃ

অনার্স: ৪ বছর।

মাস্টার্স: ১ বছর। 


ডিপার্টমেন্ট এর পাঠ্যসুচীঃ  

প্রথমত অনেকের ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে যে এখানে শুধুমাত্র জাপানিজ ভাষা পড়ানো হয়, কিন্তু এরিয়া বেজড কারিকুলাম হওয়ায় এখানে ভাষার পাশাপাশি অন্যান্য যে সকল বিষয় পাঠ্যসূচিতে থাকছে তা হলঃ

১.অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞানের মূলনীতি।

২.জাপানের অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান,সমাজবিজ্ঞান, ইতিহাস এবং সাংস্কৃতিক শিক্ষা।

৩. বিজনেস ম্যানেজমেন্ট, আর্কিওলজি। 

৪. আন্তর্জাতিক সম্পর্ক।

৫. জাপান ও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক সম্পর্ক এবং তুলনা। 


স্নাতকত্তোর পড়াশোনা ও গবেষণার সু্যোগঃ 

১. MSS (Masters of Social Science) 

২. M.Phil. (Masters of Philosophy) 

৩. Ph.D. (Doctor of Philosophy) 

৪. MJS (Masters of Japanese Studies) 

পাশাপাশি এই ডিপার্টমেন্টে পড়ে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অন্য যে কোন বিষয়ে মাস্টার্স করা যাবে। 


স্কলারশিপ ও বিদেশে পড়াশুনার সু্যোগঃ  

*Exchange program সিস্টেমের মাধ্যমে প্রতিবছর প্রতি ব্যাচ থেকে ৩ থেকে ৪ জন শিক্ষার্থী জাপানের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে স্বল্পমেয়াদী কোর্সে পড়ার সুযোগ পায়। এগুলোর সম্পূর্ণ খরচ জাপান ফাউন্ডেশন বহন করে। 

*এর বাইরেও Hokkaido University, Shimane University এর মতো স্বনামধন্য University গুলোতে স্বল্পমেয়াদী আরও কিছু স্কলারশিপ ডিপার্টমেন্ট অফার করে থাকে। 

* প্রতিবছর ১ জন শিক্ষার্থী MEXT স্কলারশিপ নিয়ে জাপানে মাস্টার্স করার সুযোগ পায়। 

উল্লেখ্য যে, MEXT স্কলারশিপ হল জাপান সরকার প্রদত্ত স্কলারশিপগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সম্মানজনক এবং চাহিদাপুর্ণ। MEXT স্কলারশিপ প্রাপ্ত একজন ছাত্রের টিউশন ফি, জাপান যাওয়া এবং পড়াশুনা শেষে দেশে ফেরার সমস্ত ব্যয় কর্তৃপক্ষ বহন করে । এছাড়াও MEXT স্কলারশিপ প্রাপ্তদেরকে মাসিক প্রায় দেড় লক্ষ ইয়েন  (প্রায় ১ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা) আর্থিক প্রণোদনা প্রদান করা হয়। 

* এছাড়াও প্রতিবছর অন্যান্য স্কলারশিপ এর মাধ্যমে ৩/৪ জন শিক্ষার্থী জাপানের বিভিন্ন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে মাস্টার্স করার সুযোগ পায়। 

*মেধাবী শিক্ষার্থীদের আবুল বারকাত পিস অ্যান্ড প্রোগ্রেস ফাউন্ডেশন, মিতসুবিশি স্কলারশিপ, রোটারি ক্লাব ও ডি.জে.এস স্কলারশিপ এর মাধ্যমে বৃত্তি প্রদান করা হয়ে থাকে।

সুযোগ সুবিধাঃ

১. ল্যাব ফ্যাসিলিটিজঃ ডিপার্টমেন্টের নিজস্ব ল্যাঙ্গুয়েজ ল্যাব, কম্পিউটার ল্যাব ও লাইব্রেরি রয়েছে। উল্লেখ্য যে,ল্যাঙ্গুয়েজ ল্যাবটি অত্যাধুনিক সুবিধাসম্পন্ন একটি পরিপূর্ণ ল্যাব।

২.কো-কারিকুলার এক্টিভিটিজঃ ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব, বুক ক্লাব, ইংলিশ ফোরাম, ডিবেটিং ক্লাব, স্পোর্টস ক্লাব।


চাকরি এবং গবেষণা ক্ষেত্রঃ

১. বাংলাদেশে জাপানিজ ফার্ম বা কোম্পানিতে চাকরি । বর্তমানে বাংলাদেশে JICA, JETRO, JBCCI ছাড়াও ৩০০ এর অধিক কোম্পানি ও প্রোজেক্ট রয়েছে। যেমনঃ Suzuki, JTCCL, Nippon Koei Bangladesh Ltd, JTI Bangladesh, Honda ইত্যাদি। গ্র্যাজুয়েট শেষে এসব কোম্পানি গুলোতে ইন্টার্নশীপের পাশাপাশি অগ্রাধিকারভিত্তিতে চাকরির সুযোগ রয়েছে।  

২. জাপান দুতাবাসে চাকরি।

৩. দোভাষী।

৪. বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।

৫. উক্ত বিষয়ভিত্তিক চাকরি ছাড়াও ব্যাংক, বিসিএস সহ অন্যান্য সরকারী চাকরীর সুযোগ তো আছেই। 

৬. এর বাইরে দেশের বাইরেও বিভিন্ন এন.জি.ও তে চাকরীর সুযোগ থাকছে।

গবেষণা ক্ষেত্রঃ

জাপান এবং বাংলাদেশের অর্থনীতি, বানিজ্য ,শিক্ষা , ভাষা ও সংস্কৃতি, ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব সহ অন্যান্য বিষয়ের উপর গবেষণা করার সুযোগ রয়েছে। 


পরীক্ষার পদ্ধতি : সেমিস্টার সিস্টেম। একেক সেমিস্টার এর সময়ব্যাপ্তি ৬ মাস। বছরে দুটি সেমিস্টার। প্রত্যেক সেমিস্টারে ১টি করে মিডটার্ম , ১/২ টি কুইজ/ক্লাস টেস্ট, অ্যাসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশন আর সবশেষে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা হয়।


অনেকে “জাপানিজ স্টাডিজ” এবং “জাপানিজ ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড কালচার”(JLC) কে এক মনে করে থাকেন। তাদের উদ্দেশ্যে বলা, “জাপানিজ স্টাডিজ” সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত এবং B.S.S (Bachelor of Social Science)  ডিগ্রি প্রদান করে থাকে। অপরদিকে “জাপানিজ ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড কালচার” JLC আধুনিক ভাষা ইনিস্টিউট (IML) এর অন্তর্ভুক্ত। 


পরিশেষে বলতে চাই, তোমার নিজের ক্যারিয়ার তোমাকেই গড়তে হবে। এক্ষেত্রে একটি ডিপার্টমেন্ট তোমার সঠিক পথ প্রদর্শক হয়ে থাকবে শুধু। সেদিক থেকে বলতে পারি বন্ধুসুলভ পরিবেশ, সিনিয়র-জুনিয়র বন্ধন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সুসম্পর্ক আর উপরোক্ত সবকিছু মিলিয়ে তুমি এখানে সর্বোচ্চ সুবিধাটাই পাবে। দিনশেষে সিদ্ধান্ত তোমার।


কোন মন্তব্য নেই

Barcin থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.