বাইনাল কাসরাইন অনুবাদ (প্যালেস ওয়াক) পার্ট-১
বাইনাল কাসরাইন অনুবাদ (প্যালেস ওয়াক) পার্ট-১
আসসালামু আলাইকুম।
বন্ধুরা আশা করি সবাই ভাল আছেন।আজ আমরা নতুন একটি বিষয় নিয়ে হাজির হয়েছি। এটি হচ্ছে আরবি সাহিত্যে একমত্র নোবেল বিজয়ী সাহিত্যিক নাজিব মাহফুজের লেখা সাড়া জাগানো উপন্যাস " বাইনাল কাসরাইন (প্যালেস ওয়াক) " । নাজিব মাহফুজ এই বইটি লেখার জন্য নোবেল পেয়েছেন। এখানে নাজিব মাহফুজের বাইনাল কসরাআইন এর কিছু অনুবাদ তুলে ধরা হলো।
নাজিব মাহফুজ
মধ্যরজনীতে সে জেগে উঠল। যেমনটা তার অভ্যাস যে, প্রত্যেক
রাতে এই সময়ে কোনো অ্যালার্ম ঘড়ি বা অন্য কিছুর সাহায্য ছাড়াই সে জেগে ওঠে, বরং যে
আগ্রহের প্রেরণায় সে রাত্রিযাপন করে, তা-ই তাকে যথাযথভাবে ও সততার সাথে রীতিমত
জাগিয়ে দেয়। (ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়ার পর) কয়েক মুহূর্ত পর্যন্ত সে ঘুম থেকে (আসলেই)
জাগ্রত হয়েছে কিনা সে সন্দেহের ঘোরে থাকে। স্বপ্নের দৃশ্যাবলি ও অনুভূতির ফিসফিস
ধ্বনি (তার মনের গভীরে) তালগোল পাকিয়ে দেয়। অথচ চোখ খোলার আগেই এক ধরনের
দুশ্চিন্তা তাকে পেয়ে বসেছে যা তাকে (সবসময়) ঘিরে রাখে, তার আশঙ্কা হয় যে, নিদ্রা
তাকে প্রতারিত করেছে। অথচ নিদ্রা তার সাথে প্রতারণা করেছে— এই ভয়ে চোখ খোলার আগেই
এক ধরনের দুশ্চিন্তা তাকে পেয়ে বসেছে যা তাকে সব সময় ঘিরে রাখে।
হালকা মাথা নেড়ে
সে রুমের গাঢ় অন্ধকারের মধ্যে তার দুচোখ উন্মোচন করল, কিন্তু সেখানে এমন কোনো
নিদর্শন নেই যা দিয়ে তার পক্ষে সময় সম্পর্কে ধারণা করা সম্ভব। আর তার রুমের নিচের
রাস্তাটি তো ফজর পর্যন্তই ঘুমায় না এবং কফি হাউজের নৈশ আলাপকারী ও দোকানদারদের
থেকে যে সমস্ত বিক্ষিপ্ত আওয়াজ রাতের প্রথমাংশে তার কাছে ভেসে আসে, মধ্য রাত এমনকি
ফজরের আগ পর্যন্ত ভেসে আসতে থাকে। অতএব, তার ভিতরের অনুভূতি, যা সচল-সতর্ক হাতঘড়ির
মত কাজ করে এবং বাড়ি ঘিরে রাখা সে স্তব্ধতা ছাড়া তার কাছে আর কোনো প্রমাণ নেই (রাত
কয়টা বাজে)। সে স্তব্ধতা প্রমাণিত করে, তার স্বামী এখনও দরজায় করাঘাত করেন নি এবং
তার ছড়ির অগ্রভাগ এখনও সিঁড়ির ধাপগুলোতে আঘাত করে নি।
এটাই সেই অভ্যাস, যা এই সময়ে তাকে জাগিয়ে দেয়। (এটি তার)
পুরনো অভ্যাস যা তার যৌবনের সূচনালগ্ন থেকেই সঙ্গী হয়েছে এবং প্রৌঢ় বয়সেও তা সে
দখলে রেখেছে। দাম্পত্য জীবনের অন্যান্য শিষ্টাচারের মধ্য থেকে এ অভ্যাসটিও রপ্ত
করেছিল যে, সে মধ্য রাতে তার স্বামী নৈশ আলাপের ফিরে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করবে।
এরপর স্বামী নিদ্রায় যাওয়ার আগ পর্যন্ত তার সেবা করবে।
(জেগে ওঠার পর) উষ্ণ ঘুমের ঘোর কাটাতে নিঃসঙ্কোচে (শয়ন থেকে
উঠে) বিছানায় বসল সে। তারপর আল্লাহর নাম নিয়ে কম্বলের নিচ থেকে (নিজেকে বের করে)
কক্ষের মেঝেতে নামল এবং খাটের স্ট্যান্ড ও জানালার চৌকাঠের দিকের রাস্তা তালাশ
করতে করতে (দরজা পর্যন্ত) গিয়ে তা খুলে দিল। আর তখনই ড্রইং রুম/হল ঘরের সেল্ফের
উপর রাখা প্রদীপের (মৃদু আলোর) ক্ষীণ রশ্মি ঘরে প্রবেশ করল। সে ধীরপায়ে প্রদীপটির
কাছে গিয়ে তা নিয়ে পুনরায় ফিরে এল তার কামরায়। তখন ছায়াবৃত্ত দ্বারা বেষ্টিত ক্ষীণ
আলোয় কম্পমান একটি বলয় (প্রদীপের) কাঁচের ফাঁক গলে বের হয়ে সিলিংয়ে প্রতিবিম্বিত
হতে লাগল। সে বাতিটাকে সোফার বিপরীতে অবস্থিত ডাইনিং টেবিলের উপর রেখে দিল।
প্রদীপটা আলোকিত করে দিল পুরো রুম। (প্রদীপের আলোতে)
বর্গাকৃতির বড় মেঝে, উঁচু দেয়ালসমূহ এবং উপরিভাগে সমান্তরাল বিমসহ তার সিলিং দৃশ্যমান
হয়ে উঠল। রুমের দামী আসবাবপত্র উদ্ভাসিত হল। শিরাজের কার্পেট, তামার তৈরি
চারস্ট্যান্ড বিশিষ্ট বড় খাট, বিরাটাকৃতির আলমারি, বিভিন্ন রং ও নকশায় ডোরাকাটা
ছোট ছোট চাদরে মোড়া দীর্ঘ সোফা।
মহিলাটি আয়নার সামনে গিয়ে নিজের ওপর একবার দৃষ্টি নিক্ষেপ
করল। সে দেখতে পেল যে তার মজবুত মস্তকবন্ধনীটা কুঞ্চিত হয়ে পিছনে সরে গেছে এবং
বাদামী রংয়ের চুলের গাছি কপালের ওপর এলোমেলো হয়ে আছে। মস্তকবন্ধনীর গিটের দিকে তার
আঙুল প্রসারিত করে গিট খুলে ফেলল। তারপর চুলের ওপরে তা সমান করে গুছিয়ে মস্তকবন্ধনীর
দুই পাশ ধীরে ও সতর্কতার সাথে বেঁধে নিল। তার দুই হাতের তালু দিয়ে চেহারার উভয় পাশ
মুছে দিল, যাতে মুখে লেগে থাকা ঘুমের অবশিষ্টাংশ দূর হয়ে যায়। সে ছিল চল্লিশের
কোঠায়। মাঝারি গড়নের, দেখতে চিকন হলেও সরু পার্শ্বগুলো নিয়ে তার শরীরটা হৃষ্টপুষ্ট
ও পরিপূর্ণ এবং সূক্ষ্মভাবে বিন্যস্ত ও সাজানো। তার চেহারাটা লম্বাটে, কপাল উঁচু,
মুখাবয়ব সূক্ষ্ম, সুন্দ দুটি চোখে জ্বলজ্বল করছে মধুময় স্বপ্নীল চাহনি, সূক্ষ্ম
ছোট নাক, যা নাসারন্ধ্রের কাছে এসে একটু প্রশস্ত, কোমল ঠোঁট-বিশিষ্ট মুখ যার নিচে
রয়েছে সুতীক্ষ্ম থুতনী, ফরসা বাদামী রংয়ের চামড়া এবং গালের কাছের তিলটার কালচে ভাব
খুবই গভীর ও উজ্জ্বল— এ সব কিছু তার সৌন্দর্যকে আরো ফুটিয়ে তুলেছে।
আরবি ব্যাকরন শিক্ষা কোর্স করুণ ফ্রি...
ওড়নাটি পেঁচানোর সময় তাকে তাড়াহুড়ো করা মেয়ের মত লাগছিল। সে
বেলকনির দরজার দিকে গেল। দরজাটা খুলে প্রবেশ করল বেলকনিতে। তারপর তার বদ্ধ খাঁচা
থেকে দাঁড়িয়ে তার চেহারা ডানে-বামে ঘুরিয়ে ঝাঁঝরি কাটা গ্রীলের বেষ্টনীর
ক্ষুদ্র-বৃত্তাকার ফাঁক দিয়ে রাস্তার দিকে তাকাল।
বেলকনিটা ছিল বাইনাল কাসরাইন বা প্রাসাদ সড়কের সামনে, তার
(বেলকনির) নিচে এসে মিশেছে দুটি রাস্তা; একটি হলো আন-নাহাসিন বা তাম্রশিল্পীদের
সড়ক যা দক্ষিণ দিকে ঢালু হয়ে নেমে গেছে। আরেকটি হলো, বাইনাল কাসরাইন বা প্রাসাদ
সড়ক যা উত্তর দিকে ক্রমশ উঁচু। তার বামদিকের রাস্তাটি সরু, এলোমেলো, প্যাঁচানো ও
অন্ধকারে ঢাকা। উপরের দিকে ঘন অন্ধকার যেখানে ঘুমন্ত ঘরের জানালাগুলো দৃষ্টিগোচর
হয়। আর হাতে-টানা ঠেলাগাড়ির বাতি এবং কফিহাউজ ও ফজর পর্যন্ত চলতে থাকা নৈশালাপের
অন্যান্য এসে মেশার কারণে নিচের দিকে অন্ধকার হালকা হয়। তার ডানদিকের রাস্তা
অন্ধকারের চাদরে পুরোপুরি ঢাকা। (কারণ) ওদিকে কোনো কফিহাউজ নেই এবং যে বড়
দোকানগুলো আছে সেগুলো আগেভাগে বন্ধ হয়ে যায়। তাই সে রাস্তাটি কারো নজর নাড়ে না।
শুধু ‘কালাউন’ এবং ‘বরকুক’ (দুটি জায়গার নাম)-এর মিনারগুলো উজ্জ্বল তারকারাজির
আলোর নিচে রাতজাগা উদ্ধত ছায়ামূর্তির মতো জ্বলজ্বল করছে। এটি এমন এক দৃশ্য, যা
সিকি শতাব্দী যাবৎ তার দুচোখ দেখছে কিন্তু সে তাতে বিরক্ত হচ্ছে না। সম্ভবত
একঘেয়েমির কারণে সে তার দীর্ঘ জীবনে জানেই না যে, বিরক্তি কী জিনিস!
পক্ষান্তরে সে যখন দীর্ঘকাল ধরে বন্ধু ও সঙ্গীহীন ছিল, তখন
দৃশ্যটিকে তার একাকিত্বের সঙ্গী ও নিঃসঙ্গতার বন্ধু করে ফেলে। আর তা (একাকিত্ব)
ছিল তার সন্তানরা ধরাধামে আসার আগ পর্যন্ত। উঁচু সিলিং, বড় বড় রুম, গভীর কূপ,
ধূলিপূর্ণ আঙিনাসহ বিশাল দোতলা বাড়িতে দিন ও রাতের অধিকাংশ সময়ে সে ছাড়া আর কেউ
থাকত না।
বিয়ের সময় সে চিল চৌদ্দ বছর বয়সেরও ছোট একটা মেয়ে। (বিয়ের
পর) তার শাশুড়ি ও প্রধান মনিবের (শ্বশুরের) মৃত্যুর পর খুব দ্রুত নিজেকে এ বিশাল
বাড়ির কর্ত্রী হিসেবে পেয়েছে সে। বাড়ি দেখাশোনা করার জন্য এক বৃদ্ধা মহিলা তাকে
সাহায্য করলেও রাতের আঁধার ঘনিয়ে আসতেই তিনি জীন ও ভূতের ভীতিপ্রদ রাতের পৃথিবীতে
তাকে ছেড়ে আঙিনার এক প্রান্তে ঘুমাতে চলে যেতেন। তার ভীতি-সঞ্চারক অবাধ্য স্বামী
দীর্ঘ নৈশালাপ থেকে ফিরে আসা পর্যন্ত সে কিছুক্ষণ তন্দ্রাচ্ছন্ন আবার কিছুক্ষণ
জাগ্রত অবস্থায় রাত কাটাত।
তার আত্মাকে প্রশান্ত করার জন্য তার মাঝে এ অভ্যাসটি গড়ে
উঠেছিল যে, তার বৃদ্ধ পরিচারিকাকে সাথে নিয়ে হাত প্রসারিত করে বাতিটা সামনে ধরে
বিভিন্ন কোণে সে ভীত ও অনুসন্ধিৎসু দৃষ্টি নিক্ষেপ করত এবং প্রত্যেকটা কক্ষ ঘুরে
ঘুরে দেখে তারপর সজোরে বন্ধ করে দিত। সে প্রথমে নিচ তলা থেকে শুরু করে দ্বিতীয়
বারে ওপরতলা দেখত এবং শয়তান ও ভূত-প্রেতকে প্রতিহত করার জন্য তার মুখস্থ থাকা সূরা
ও আয়াতগুলো তিলাওয়াত করত। অতঃপর এ কাজ শেষ হত তার রুমে এসে। দরজা বন্ধ করে বিছানায়
উঠলেও ঘুমিয়ে না পড়া পর্যন্ত সূরা তিলাওয়াত অব্যাহত থাকত।
সে এ বাড়িতে তার বৈবাহিক জীবনের শুরুতে ভীষণ ভয় পেত।
মানুষের জগতের চেয়ে জিনের জগত সম্পর্কে সে অনেক বেশি জানত বলে তার মনে দৃঢ় বিশ্বাস
ছিল যে, এ বিশাল বাড়িতে সে একা নয়। পরিত্যক্ত সুবিশাল শূন্য ঘরগুলো থেকে
ভূত-প্রেতকে দীর্ঘদিনের জন্য দূরে সরিয় রাখাও সম্ভব না। সম্ভবত তাকে এ বাড়িতে আনার
আগ থেকেই, এমনকি সে দুনিয়ার আলো দেখার আগ থেকেও হয়তো (এই অশুভ অস্তিত্বগুলো) এখানে
আস্তানা গেড়েছে।
তাদের ফিসফিস আওয়াজ কতবার যে তার কানে এসেছে! তাদের উষ্ণ
নিঃশ্বাসে কতবার যে সে জেগে উঠেছে! (একা থাকলে) সূরা ফাতিহা ও ইখলাস পাঠ এবং
বেলকনির দিকে ছুটে গিয়ে গ্রীলের ফাঁক দিয়ে ঠেলাগাড়ি ও কফিশপের আলোর দিকে তীর্যক
দৃষ্টি নিক্ষেপ করা ছাড়া আর কোনো সাহায্যকারী তার থাকে না। আর সে অধীর আগ্রহ ও
মনোযোগ দিয়ে অপেক্ষা করে কারো কাশি বা হাসির আওয়াজ শোনার, যার মাধ্যমে সে তার
নিঃশ্বাস ফিরিয়ে আনতে পারে (সে স্বাভাবিক হয়)।
এরপর তার সন্তানের এলো একের পর এক। কিন্তু পৃথিবীতে আগমনের
প্রথম দিনগুলোতে তারা তো ছিল হৃষ্টপুষ্ট মাংস মাত্র, যা তার ভীতি দূর করে মনকে
আশ্বস্ত করত না। বরং তার দুর্বল মনে মায়া ও শঙ্কা আরো প্রবল হয়ে উঠল, পাছে তাদের
কোনো অনিষ্ট তাকে স্পর্শ করে। তার বাহু দিয়ে সে তাদেরকে আগলিয়ে রাখত, মমতার
নিঃশ্বাসে ভরে দিত এবং জাগ্রত বা নিদ্রাবস্থায় কুরআনের সূরা, তাবিজ, দোয়া ও জাদুর
ঢাল দিয়ে ওদেরকে ঘিরে রাখত। এ সব সত্ত্বেও, নৈশ বিনোদন শেষে স্বামী ফিরে আসার আগ
পর্যন্ত সে প্রকৃত শান্তির স্বাদ পেত না।
এ দৃশ্যটি অপরিচিত ছিল না যে, সে তার একাকী শিশু-বাচ্চাটিকে
ঘুম পাড়াতো, আদর করত এবং হঠাৎ নিজের বুকের সাথে জড়িয়ে রাখত। ভীতি ও শঙ্কা নিয়ে কান
পেতে শুনত এবং রুমে কাউকে সম্বোধন করার মত উচ্চ কণ্ঠে বলতো, “এখান থেকে ভাগো (দূর
হও), এটা তোমার জায়গা নয়। আমরা মুসলিম এবং এক আল্লাহর বিশ্বাসী।” এরপর দ্রুত ও
উচ্চস্বরে সূরা ইখলাস পড়তে থাকত।
কাল পরিক্রমায় যখন প্রেতাত্মার সাথে তার মেলামেশা ও বসবাস
দীর্ঘ হলো, তখন তার ভয়ভীতি অনেকটাই কমে গেল এবং (কোনো রকম বিপদের আশঙ্কা ছাড়াই)
শান্ত থাকত। কারণ ব্যাপারটি তার কাছে রসিকতার পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে, যা কোনো অশুভ
কিছু ঘটাতে পারে না।
আর কখনো যদি ভয়-ভীতির কুমন্ত্রণা তার মনে ভেসে আসত, তখন
দৃঢ়তার সাথে দীর্ঘশ্বাসে সে বলত, ‘তুমি কি রহমানের বান্দাদের সম্মান করো না?
আমাদের ও তোমাদের মাঝে (ফয়সালাকারী হিসেবে) আল্লাহ আছেন। সুতরাং সম্মানের সাথে
কেটে পড়ো।” কিন্তু তার স্বামী (নৈশালাপের পর) ঘরে না ফেরে পর্যন্ত প্রকৃত
প্রশান্তি কী জিনিস তা বুঝত না। বাস্তবিকপক্ষে জাগ্রত বা নিদ্রিক যে কোনো অবস্থায়
বাড়িতে শুধু স্বামীর উপস্থিতিই তার অন্তরে প্রশান্তি ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট
ছিল। চাই ঘরের দরজা খোলা বা বন্ধ থাকুক, বাতি জ্বালানো বা নিভানো থাকুক।
দাম্পত্যজীবনের শুরুতে তার মনে (চিন্তা) উদিত ছিল যে, তার
স্বামীর অনবরত নৈশালাপ বা রাত্রিজাগরণের ব্যাপারে সে এক প্রকার মৃদু ও শালীন
আপত্তি করবে। (প্রতিবাদের পর তার শাস্তি ছিল) সে তার কান ধরে উচ্চস্বরে ও দৃঢ়
কণ্ঠে ঘোষণা দিয়ে দিল যে, “আমি পুরুষ মানুষ। আমিই একমাত্র ও আদেশ ও নিষেধদাতা।
আমার চালচলনে কোনো ধরনের মন্তব্য গ্রহণ করতে পারব না। আমার আনুগত্য করাই তোমার
একমাত্র দায়িত্ব। সুতরাং আমাকে বাধ্য করবে না তোমাকে শাস্তি দিতে।”
এ ঘটনা এবং পরবর্তী সময়ের আরো কিছু ঘটনা থেকে সে শিক্ষা
নিয়েছে যে, সে প্রেতাত্মাদের সাথে বসবাস-সহ সব কিছু সহ্য করতে পারবে। কিন্তু
স্বামীর ক্রোধান্বিত রক্তচক্ষু সহ্য করতে পারবে না। সুতরাং কোনো রকম শর্ত ছাড়াই
তার উপর আনুগত্য করা আবশ্যক।
বাইনাল কাসরাইন এর বাকি অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন,
bainal kasrain pdfবাইনাল কাসরাইন
নাজিব মাহফুজ
আরবি উপন্যাস, আরবি ভাষার অনুবাদ,
অনেক সুন্দর অনুবাদ৷ নাজিব মাহফুজ তিনিই হলেন এমন একজন সাহিত্যিক যিনি আরবী সাহিত্যের জন্য নোবেল প্রাইজ পেয়েছিলেন৷ আমি দাওরায়ে হাদীসের বছর তার লেখা বই পড়েছিলাম৷ আমার জানা নেই তার বইগুলো আরবী থেকে বাংলাতে অনুবাদ হচ্ছে কি না৷
উত্তরমুছুনএই অনুবাদ কি আপনি করেছেন?